
মিঠাপুকুরে বিধবা নারী কর্তৃক লেবার সর্দারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টা মামলা দায়েরের অভিযোগ
আব্দুল হালিম, রংপুর থেকে
রংপুরের মিঠাপুকুরে এক বিধবা নারী কর্তৃক ঢালাই লেবার সর্দারকে আদালতে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই লেবার সর্দারের নাম জোনাব আলী(৪৫)। তিনি মিঠাপুকুর উপজেলার ১ নং খোঁড়া গাছ ইউনিয়নের নাপিত পাড়া গ্রামের মৃত- এমদাদুল হকের পুত্র।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জোনাব আলী পেশায় একজন লেবার সর্দার। কন্টাক্ট নিয়ে তিনি বিভিন্ন বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করেন। তার অধিনে প্রায় ৩০/৩৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। ঘটনার দিন- ৮ সেপ্টেম্বর , রাত আনুমানিক সাড়ে আট ঘটিকার সময় জোনাব আলী,তার অধিনস্থ লেবার হিসেবে কর্মরত ওই নারীর বড় ছেলেকে ডাকতে ওই নারীর বাড়িতে গিয়েছিলেন।
ডাকাডাকির একপর্যায়ে কারো সাড়াশব্দ না পেয়ে বের হওয়ার সময় ওই নারীর বড় ছেলে তাদের বাড়িতে জোনাব আলীকে দেখে বিস্ময় এবং সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, আমার মায়ের ঘরের দরজা খোলা,আর আপনি এখানে কি করছেন? তখন তিনি বলেন, আমি তোমাকে ডাকার জন্য এসেছিলাম,তুমি নাই এজন্য আমি চলে যাচ্ছি। পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন।
পরদিন (৯ -সেপ্টেম্বর) জোনাব আলী লোক মাধ্যমে জানতে পারেন, তার বিরুদ্ধে ওই নারী তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজনকে তার বিরুদ্ধে বিচার এবং মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একপর্যায়ে দফায় দফায় ওই নারী তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে জানায়,টাকা না দিলে তার বিরুদ্ধে তিনি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করবেন। পরে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় মামলাটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে ওই নারী বাদী হয়ে গত- (১-অক্টোবর) রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালত-১,এ মামলাটি দায়ের করেন, এবং মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এমদাদুল হক জানান, এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কয়েকবার বসেছিলাম। কিন্তু ওই নারী ছাড়া ঘটনার বিষয়ে তেমন কেউ কিছু জানেনা। বিচারে মিমাংসা করার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা দাবি করেছিলো। পরে আমরা বলেছি, আমরা মিথ্যা ঘটনায় টাকা পয়সা নিয়ে দিতে পারবোনা।নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, রাত সাড়ে আটটার সময় এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আমরা জানতাম। ওই নারীর বোনের বাড়ি পাশ্ববর্তী গ্রামে হওয়ার পরেও তারা বলছে,তারা সব দেখেছে। ঘটনার সময় তারা তাঁকে কেনো আটক কিংবা চিৎকার করেনি এ নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেন।
ওই নারী জানান, আমি গরীব মানুষ। আমার পক্ষে কেউ স্বাক্ষী দিবেনা। দীর্ঘদিন থেকে জোনাব আলী আমার পিছনে পড়ে আছে। সেদিন রাতে সে আমার গোয়ালঘরে লুকিয়ে ছিলো। তবে তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে তিনি জানাতে অস্বীকৃতি জানান। মামলার ৫ নং স্বাক্ষী বোন,সীমা বেগম জানান, ঘটনা রাত তিনটায় ঘটলেও মামলার বিবরণে বিকাল তিনটা দেখানো হয়েছে। উকিল বলেছে,রাতে ঘটনা দেখালে মামলা হালকা হবে,তাই ঘটনা বিকাল ৩,টা দেখানো হয়েছে।
অভিযুক্ত জনাব আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করেছেন, সেখানে স্বাক্ষী হিসেবে তার নিজের বোন আর দেবর ছাড়া কেউ নেই। এটা তাদের একটি সাজানো পরিকল্পনা। আমি ন্যায় বিচার চাই। তদন্ত করে যদি আমার অপরাধ প্রমানিত হয়,তাহলে আমি যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবো। আর যদি ওই মহিলা এবং তার পরিবারের অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তাদের বিচার দাবি করছি। এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। যেহেতু ওই নারী আদালতে মামলা করেছে,সেহেতু আমার আর বলার কিছু নেই।