10:06 pm, Sunday, 20 April 2025

কচুরিপানায় দিশেহারা চলনবিলের  কৃষক 

কচুরিপানায় দিশেহারা চলনবিলের কৃষক 

কাবিল উদ্দিন কাফি, সিংড়া(নাটোর)প্রতিনিধিঃ 

কৃষি প্রধান চলনবিলের মাঠ জুড়ে এখন কচুরী পানার স্তুপ আর স্তুপ। বন্যার পানি নেমে গেলেও জমি থেকে নামেনি কচুরীপানা। ফলে বোরোধান চাষে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। জমি থেকে কচুরী পানা অপসারণে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে তাদের।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল অধ্যুষিত সাতপুকুরিয়া, ডাহিয়া, আয়েশ, বেড়াবাড়ি সহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে  কৃষকদের জমি থেকে কচুরী পানা অপসারণের চিত্র দেখা গেছে। কৃষকরা বলছেন বোরো ধান আমাদের সব চেয়ে বড় অর্থকরী ফসল। এই আবাদের আগে কচুরী পানা অপসারণ আমাদের জন্য গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে।  

 উপজেলার সাতপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক তুহিন ও ডাহিয়া গ্রামের কৃষক আসাদুল  জানান,   প্রথমে কচুরী পানার উপরে ঘাস মারা বিষ স্প্রে করতে হয় । বিষ স্প্রে করার ৪ থেকে ৫ দিন পর কচুরীপানা মরে পঁচে যায়। এর ঠিক সপ্তাহ খানেক পর  রোদে শুকিয়ে গেলে এই মরা পঁচা কচুরীপানা আগুনে পড়াতে হয়। এর পর শ্রমিক দিয়ে পরিস্কার করতে হয়।  সব মিলে জমি থেকে কচুরীপানা পরিস্কার করতে  ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগছে তাদের।   এতে প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কৃষকরা জানায়,  বোরো ধান চাষ করে যে লাভের আশা ছিল এবছর জমি পরিষ্কার করতে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে  তাতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

এদিকে কচুরী পানা ধবংসে যত্রতত্র ভাবে  অতিমাত্রায় ক্ষতিকর  কীটনাশক ব্যবহারে হুমকিতে পড়েছে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য। অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহারের দাবি পরিবেশ কর্মীদের। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় বোরোধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি।  চলনবিলের নীচু এলাকার কিছু মাঠে বর্ষার সময়ে ভেসে আসা কচুরী পানার স্তুপ জমেছে। আমরা কৃষকদের  কচুরী পানা ধবংসের জন্য ছত্রাকনাশক  স্পৈ করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কচুরীপানা আগুনে না পুড়িয়ে জমিতেই স্তুপ করে জৈব সার তৈরী করার   পরামর্শ দিচ্ছি।  কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ফ্রিজ ধরে খোলার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে দুইবোনের-মৃত্যু

কচুরিপানায় দিশেহারা চলনবিলের  কৃষক 

Update Time : 04:24:04 pm, Saturday, 14 December 2024

কচুরিপানায় দিশেহারা চলনবিলের কৃষক 

কাবিল উদ্দিন কাফি, সিংড়া(নাটোর)প্রতিনিধিঃ 

কৃষি প্রধান চলনবিলের মাঠ জুড়ে এখন কচুরী পানার স্তুপ আর স্তুপ। বন্যার পানি নেমে গেলেও জমি থেকে নামেনি কচুরীপানা। ফলে বোরোধান চাষে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। জমি থেকে কচুরী পানা অপসারণে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে তাদের।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল অধ্যুষিত সাতপুকুরিয়া, ডাহিয়া, আয়েশ, বেড়াবাড়ি সহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে  কৃষকদের জমি থেকে কচুরী পানা অপসারণের চিত্র দেখা গেছে। কৃষকরা বলছেন বোরো ধান আমাদের সব চেয়ে বড় অর্থকরী ফসল। এই আবাদের আগে কচুরী পানা অপসারণ আমাদের জন্য গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে।  

 উপজেলার সাতপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক তুহিন ও ডাহিয়া গ্রামের কৃষক আসাদুল  জানান,   প্রথমে কচুরী পানার উপরে ঘাস মারা বিষ স্প্রে করতে হয় । বিষ স্প্রে করার ৪ থেকে ৫ দিন পর কচুরীপানা মরে পঁচে যায়। এর ঠিক সপ্তাহ খানেক পর  রোদে শুকিয়ে গেলে এই মরা পঁচা কচুরীপানা আগুনে পড়াতে হয়। এর পর শ্রমিক দিয়ে পরিস্কার করতে হয়।  সব মিলে জমি থেকে কচুরীপানা পরিস্কার করতে  ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগছে তাদের।   এতে প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। কৃষকরা জানায়,  বোরো ধান চাষ করে যে লাভের আশা ছিল এবছর জমি পরিষ্কার করতে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে  তাতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।

এদিকে কচুরী পানা ধবংসে যত্রতত্র ভাবে  অতিমাত্রায় ক্ষতিকর  কীটনাশক ব্যবহারে হুমকিতে পড়েছে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য। অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহারের দাবি পরিবেশ কর্মীদের। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় বোরোধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি।  চলনবিলের নীচু এলাকার কিছু মাঠে বর্ষার সময়ে ভেসে আসা কচুরী পানার স্তুপ জমেছে। আমরা কৃষকদের  কচুরী পানা ধবংসের জন্য ছত্রাকনাশক  স্পৈ করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কচুরীপানা আগুনে না পুড়িয়ে জমিতেই স্তুপ করে জৈব সার তৈরী করার   পরামর্শ দিচ্ছি।  কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।