4:35 am, Thursday, 1 May 2025

মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল সহ ৯দফা দাবি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল সহ ৯দফা দাবি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

নিজেস্ব প্রতিনিধি মানিক মিয়া

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ‘বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল বা রোহিত করা’সহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি)। তারা বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব উন্নত দেশে ইতিমধ্যে মৃত্যুদণ্ড আইনটি বাতিল করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড আইনটি মানবতাবিরোধী একটি নিষ্ঠুর আইন। বাংলাদেশের এই আইনটি বাতিল করতে হবে।


মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক ‘সর্বস্তরে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ৯ দফা দাবি আদায়ে’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।

বিএইচআরসি দাবিগুলো হলো—

১। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই পৃথক পৃথক একাধিক নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা এবং মানবাধিকার কর্মী হত্যা, নিখোঁজ (গুম) এবং আহতদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকারকে অবশ্যই নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও আইনে সোপর্দ করতে হবে।

২। বর্তমান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (এনএইচআরসি) ভেঙে একটি উচ্চ পুনর্গঠন কমিটি গঠন পূর্বক নতুনভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন প্রণয়ন করতে হব।

৩। এনএইচআরসি’কে অবশ্যই সরকারের দালালি করার কাজে নিয়োজিত করা যাবে না। একটি নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দিতে হবে।

৪। বিগত স্বৈরাচার সরকার এবং কামাল উদ্দিন বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মানবাধিকারকর্মী যথাক্রমে নিহত, নিখোঁজ এবং আহতদের উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

৫। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি হস্তক্ষেপে ও চাপ দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তিনটি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থগিত করা নিবন্ধনগুলো পুনরায় চালু করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে স্থগিত রেজিস্ট্রেশনগুলো পুনর্বহাল করতে হবে।

৬। স্বৈরাচার সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ফরমায়েশি বিচারপতি ও বিচারকদের তালিকা তৈরি করে অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে।

৭। মৃত্যু দন্ড আইন বাংলাদেশে বাতিল/ রোহিত করতে হবে। পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত দেশে ইতিমধ্যে মৃত্যু দন্ড আইনটি বাতিল করা হয়েছে । মৃত্যু দন্ড আইনটি মানবতা বিরোধী একটি নিষ্ঠূর আইন। বাংলাদেশে এ আইনটি বাতিল করতে হবে ।

৮ যাবৎ জীবন কারাদণ্ড আইন সংশোধন করতে হবে। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে আইনে যাবৎ জীবন কারাদন্ডে মেয়াদ ছিল ১৪ বছর । রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে বর্তমানে যাবত জীবন কারাদন্ডে মেয়াদ ৩২ বছর করা হয়েছে ।


৯। প্রতিটি নাগরিক ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে— এটা নাগরিকের মানবাধিকার। বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তাই ৯০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করতে হবে।

এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সরকার দাবি না মানলে ৪ সপ্তাহ পর বিএইচআরসি থেকে সারা দেশ ও বিদেশের শাখাগুলো একযুগে অব্যাহতভাবে নিজ নিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করবে। আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচিতে থাকবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং স্মারকলিপি প্রদান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নরসিংদীর লটকন পেল জিআই পণ্যের মর্যাদা: জেলা প্রশাসকের হাতে সনদ হস্তান্তর

মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল সহ ৯দফা দাবি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

Update Time : 07:44:19 pm, Tuesday, 11 February 2025

মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল সহ ৯দফা দাবি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন

নিজেস্ব প্রতিনিধি মানিক মিয়া

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ‘বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড আইন বাতিল বা রোহিত করা’সহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি)। তারা বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব উন্নত দেশে ইতিমধ্যে মৃত্যুদণ্ড আইনটি বাতিল করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড আইনটি মানবতাবিরোধী একটি নিষ্ঠুর আইন। বাংলাদেশের এই আইনটি বাতিল করতে হবে।


মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক ‘সর্বস্তরে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ৯ দফা দাবি আদায়ে’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।

বিএইচআরসি দাবিগুলো হলো—

১। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই পৃথক পৃথক একাধিক নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা এবং মানবাধিকার কর্মী হত্যা, নিখোঁজ (গুম) এবং আহতদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকারকে অবশ্যই নির্যাতনকারীদের গ্রেফতার ও আইনে সোপর্দ করতে হবে।

২। বর্তমান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (এনএইচআরসি) ভেঙে একটি উচ্চ পুনর্গঠন কমিটি গঠন পূর্বক নতুনভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন প্রণয়ন করতে হব।

৩। এনএইচআরসি’কে অবশ্যই সরকারের দালালি করার কাজে নিয়োজিত করা যাবে না। একটি নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দিতে হবে।

৪। বিগত স্বৈরাচার সরকার এবং কামাল উদ্দিন বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মানবাধিকারকর্মী যথাক্রমে নিহত, নিখোঁজ এবং আহতদের উপযুক্ত ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

৫। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি হস্তক্ষেপে ও চাপ দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তিনটি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থগিত করা নিবন্ধনগুলো পুনরায় চালু করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে স্থগিত রেজিস্ট্রেশনগুলো পুনর্বহাল করতে হবে।

৬। স্বৈরাচার সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ফরমায়েশি বিচারপতি ও বিচারকদের তালিকা তৈরি করে অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে।

৭। মৃত্যু দন্ড আইন বাংলাদেশে বাতিল/ রোহিত করতে হবে। পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত দেশে ইতিমধ্যে মৃত্যু দন্ড আইনটি বাতিল করা হয়েছে । মৃত্যু দন্ড আইনটি মানবতা বিরোধী একটি নিষ্ঠূর আইন। বাংলাদেশে এ আইনটি বাতিল করতে হবে ।

৮ যাবৎ জীবন কারাদণ্ড আইন সংশোধন করতে হবে। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে আইনে যাবৎ জীবন কারাদন্ডে মেয়াদ ছিল ১৪ বছর । রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে বর্তমানে যাবত জীবন কারাদন্ডে মেয়াদ ৩২ বছর করা হয়েছে ।


৯। প্রতিটি নাগরিক ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে— এটা নাগরিকের মানবাধিকার। বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। তাই ৯০ কর্ম দিবসের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করতে হবে।

এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সরকার দাবি না মানলে ৪ সপ্তাহ পর বিএইচআরসি থেকে সারা দেশ ও বিদেশের শাখাগুলো একযুগে অব্যাহতভাবে নিজ নিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করবে। আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচিতে থাকবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং স্মারকলিপি প্রদান।