11:12 pm, Sunday, 20 April 2025

সিংড়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ১৫জন

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:11:17 pm, Sunday, 16 February 2025
  • 33 Time View

সিংড়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ১৫জন

সাধীন আলম নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়ায় দু”গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কদমকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিপক্ষের ছোঁড়া ছররা গুলিতে একপক্ষের অনন্ত ১৫ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন আহতকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কদমকুড়ি গ্রামে জমিতে পানি সেচ দেওয়া নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। এছাড়া সম্প্রতি কদমকুড়ি জামে মসজিদের হিসাব-নিকাশ নিয়েও গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

গত ৩/৪ দিন আগে ওই গ্রামের ওয়াদুদ ফকিরের জমিতে পানি সেচ বন্ধ করে দেন প্রতিপক্ষ রতন আলী ও তার ভাই মানিক হোসেন। এতে শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা। এর জেরে শনিবার দিবাগত রাতে মানিক হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ সময় প্রতিপক্ষদের দিকে ছররা গুলি ছোঁড়ে তারা। এতে অন্তত ১৫জন আহত হয়। গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায় যে, ওই গ্রামে খাস সম্পত্তির পুকুর ও জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত গোলমাল ছিল ও আদালতে মামলা ছিল। এর আগে মারামারির ঘটনা হত্যার ঘটনা ও ঘটেছিল। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত এই গোলমাল চলছিল।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে রাতেই আহতদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছররা গুলিতে আহতরা হল, ইব্রাহিম মন্ডল (৩২), এলাহী মন্ডল (২৮), আল আমিন মন্ডল (১৬), নাসিম আলী (২৫), সুজন আলী (১৭), শাকিল (১৮), রফিকুল ইসলাম (৪৮), ফরিদ আলী (৩৮), সুয়েল আলী (২৪), আব্দুল আজিজ (৪৯), মান্নান হোসেন (৫৮), মাসুদ রানা (৩২), শাহাদত আলী (৩৯), হনুফা বেগম (৫২) ও জাকারিয়া হোসেন (১৮)।

আহত এলাহী মন্ডল বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পানি সেচ বন্ধ করে দিয়েছে মানিক। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা ও গুলি চালানো হয়েছে।’ আহতের স্বজন রিতা খাতুন জানান, জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে গত তিনদিন ধরে বিরোধ চলছিল। হঠাৎ প্রতিপক্ষের পাঁচজন বন্দুক হাতে তাদের ওপর গুলি চালায়। সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আতঙ্কে মাটিতে পড়ে যান।


স্থানীয় বাসিন্দা মামুন হোসেন বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর ধরে কদমকুড়ি জামে মসজিদ কমিটি দখল করে রেখেছে রতন আলী, আবুল হোসেন ও এছার উদ্দিন। মসজিদের কোনো উন্নয়ন তারা করেনি। সম্প্রতি আমরা ছয় ভাই মসজিদের উন্নয়নের এক লাখ টাকা দান করি। সেই টাকার হিসাব চাওয়ায় আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। এঘটনায় রতন আলীর যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে তার ভাই মানিক হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘জমির মালিকানা বা দখল নিয়ে কোনো ঘটনা নেই। জমির আইল কেটে পানি চলে যাওয়ায় এ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এখানে মসজিদের হিসাব-নিকাশেরও কোনো ঘটনা নেই।’


সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ইবতেদায়ী শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন

সিংড়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ১৫জন

Update Time : 11:11:17 pm, Sunday, 16 February 2025

সিংড়ায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত অন্তত ১৫জন

সাধীন আলম নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়ায় দু”গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কদমকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিপক্ষের ছোঁড়া ছররা গুলিতে একপক্ষের অনন্ত ১৫ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন আহতকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কদমকুড়ি গ্রামে জমিতে পানি সেচ দেওয়া নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। এছাড়া সম্প্রতি কদমকুড়ি জামে মসজিদের হিসাব-নিকাশ নিয়েও গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

গত ৩/৪ দিন আগে ওই গ্রামের ওয়াদুদ ফকিরের জমিতে পানি সেচ বন্ধ করে দেন প্রতিপক্ষ রতন আলী ও তার ভাই মানিক হোসেন। এতে শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা। এর জেরে শনিবার দিবাগত রাতে মানিক হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ সময় প্রতিপক্ষদের দিকে ছররা গুলি ছোঁড়ে তারা। এতে অন্তত ১৫জন আহত হয়। গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায় যে, ওই গ্রামে খাস সম্পত্তির পুকুর ও জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত গোলমাল ছিল ও আদালতে মামলা ছিল। এর আগে মারামারির ঘটনা হত্যার ঘটনা ও ঘটেছিল। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত এই গোলমাল চলছিল।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে রাতেই আহতদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছররা গুলিতে আহতরা হল, ইব্রাহিম মন্ডল (৩২), এলাহী মন্ডল (২৮), আল আমিন মন্ডল (১৬), নাসিম আলী (২৫), সুজন আলী (১৭), শাকিল (১৮), রফিকুল ইসলাম (৪৮), ফরিদ আলী (৩৮), সুয়েল আলী (২৪), আব্দুল আজিজ (৪৯), মান্নান হোসেন (৫৮), মাসুদ রানা (৩২), শাহাদত আলী (৩৯), হনুফা বেগম (৫২) ও জাকারিয়া হোসেন (১৮)।

আহত এলাহী মন্ডল বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পানি সেচ বন্ধ করে দিয়েছে মানিক। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাদের ওপর হামলা ও গুলি চালানো হয়েছে।’ আহতের স্বজন রিতা খাতুন জানান, জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে গত তিনদিন ধরে বিরোধ চলছিল। হঠাৎ প্রতিপক্ষের পাঁচজন বন্দুক হাতে তাদের ওপর গুলি চালায়। সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আতঙ্কে মাটিতে পড়ে যান।


স্থানীয় বাসিন্দা মামুন হোসেন বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর ধরে কদমকুড়ি জামে মসজিদ কমিটি দখল করে রেখেছে রতন আলী, আবুল হোসেন ও এছার উদ্দিন। মসজিদের কোনো উন্নয়ন তারা করেনি। সম্প্রতি আমরা ছয় ভাই মসজিদের উন্নয়নের এক লাখ টাকা দান করি। সেই টাকার হিসাব চাওয়ায় আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। এঘটনায় রতন আলীর যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে তার ভাই মানিক হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘জমির মালিকানা বা দখল নিয়ে কোনো ঘটনা নেই। জমির আইল কেটে পানি চলে যাওয়ায় এ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এখানে মসজিদের হিসাব-নিকাশেরও কোনো ঘটনা নেই।’


সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।