7:08 am, Friday, 19 September 2025

বিষমুক্ত আম চাষে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার রপ্তানিতে নতুন দিগন্তের সূচনা

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:07:47 pm, Sunday, 20 April 2025
  • 35 Time View

বিষমুক্ত আম চাষে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার রপ্তানিতে নতুন দিগন্তের সূচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক জে ডি উজ্জ্বল

ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রথমবারের মতো ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ বা GAP (Good Agricultural Practices) পদ্ধতিতে বিষমুক্ত আম চাষ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ‘পার্টনার প্রকল্প’-এর আওতায় এই কার্যক্রম বালিয়াডাঙ্গীতে প্রথমবার মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আবু বেলাল তার তিন বিঘা জমিতে বানানা ম্যাংগো ও আম্রপালি জাতের আম গাছ লাগিয়েছেন। এই আম বাগানে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ, ফল ব্যাগিং, নিরাপদ বালাইনাশক ব্যবহার, এবং বাগানের চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরা সহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, সারাদেশে ১৫টি ফসল— যার মধ্যে ১০টি সবজি এবং ৫টি ফল— উত্তম কৃষি চর্চা বা GAP পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গীতে আম দিয়ে এর যাত্রা শুরু হলো। এর মাধ্যমে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন করা যাবে, যা স্থানীয় কৃষকদের জন্য লাভজনক হবে এবং দেশের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করবে।
কৃষক আবু বেলাল জানান, “আমি প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতিতে আম চাষ শুরু করেছি। প্রযুক্তির সহায়তা এবং কৃষি অফিস থেকে পাওয়া পরামর্শ আমার কাজকে সহজ করেছে। এখন আমি আশাবাদী যে, এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে রপ্তানির জন্য আম উৎপাদন করতে পারবো।”
এদিকে, বালিয়াডাঙ্গীর অন্যান্য কৃষকরাও এই পদ্ধতিতে আম চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, আবু বেলালের ফলন দেখে তারা আগ্রহী হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চান।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সবধরনের কারিগরি পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত তদারকি করছেন এবং চাষিদের পাশে থেকে কাজ করছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করে তোলা। GAP পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি প্রযুক্তি, যা কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে এবং দেশে বিষমুক্ত ফল ও সবজি উৎপাদন নিশ্চিত করবে। আমের মাধ্যমে বালিয়াডাঙ্গীতে এর যাত্রা শুরু হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আশাবাদী।”
এছাড়া, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সকল ধরনের পরামর্শ, সহযোগিতা এবং উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তির সহায়তা দিচ্ছে। এই পদ্ধতি বাংলাদেশে কৃষির উন্নতি এবং দেশের বাজারে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

১২ তম বর্ষে স্বাধীনতা দিবস উৎসব উদযাপন সমিতির এবারের ভাবনা– “পাঁজর”

বিষমুক্ত আম চাষে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার রপ্তানিতে নতুন দিগন্তের সূচনা

Update Time : 03:07:47 pm, Sunday, 20 April 2025

বিষমুক্ত আম চাষে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার রপ্তানিতে নতুন দিগন্তের সূচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক জে ডি উজ্জ্বল

ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রথমবারের মতো ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ বা GAP (Good Agricultural Practices) পদ্ধতিতে বিষমুক্ত আম চাষ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ‘পার্টনার প্রকল্প’-এর আওতায় এই কার্যক্রম বালিয়াডাঙ্গীতে প্রথমবার মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আবু বেলাল তার তিন বিঘা জমিতে বানানা ম্যাংগো ও আম্রপালি জাতের আম গাছ লাগিয়েছেন। এই আম বাগানে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ, ফল ব্যাগিং, নিরাপদ বালাইনাশক ব্যবহার, এবং বাগানের চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরা সহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, সারাদেশে ১৫টি ফসল— যার মধ্যে ১০টি সবজি এবং ৫টি ফল— উত্তম কৃষি চর্চা বা GAP পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গীতে আম দিয়ে এর যাত্রা শুরু হলো। এর মাধ্যমে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন করা যাবে, যা স্থানীয় কৃষকদের জন্য লাভজনক হবে এবং দেশের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করবে।
কৃষক আবু বেলাল জানান, “আমি প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতিতে আম চাষ শুরু করেছি। প্রযুক্তির সহায়তা এবং কৃষি অফিস থেকে পাওয়া পরামর্শ আমার কাজকে সহজ করেছে। এখন আমি আশাবাদী যে, এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে রপ্তানির জন্য আম উৎপাদন করতে পারবো।”
এদিকে, বালিয়াডাঙ্গীর অন্যান্য কৃষকরাও এই পদ্ধতিতে আম চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, আবু বেলালের ফলন দেখে তারা আগ্রহী হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চান।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সবধরনের কারিগরি পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত তদারকি করছেন এবং চাষিদের পাশে থেকে কাজ করছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করে তোলা। GAP পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি প্রযুক্তি, যা কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে এবং দেশে বিষমুক্ত ফল ও সবজি উৎপাদন নিশ্চিত করবে। আমের মাধ্যমে বালিয়াডাঙ্গীতে এর যাত্রা শুরু হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আশাবাদী।”
এছাড়া, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সকল ধরনের পরামর্শ, সহযোগিতা এবং উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তির সহায়তা দিচ্ছে। এই পদ্ধতি বাংলাদেশে কৃষির উন্নতি এবং দেশের বাজারে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।